সিলেট সংবাদদাতা:
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, বিদেশে বসে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নষ্ট করতে চায় শেখ হাসিনা। আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে চায়। এই আওয়ামী লীগ, এই ফ্যাসিবাদের দোসররা বাংলাদেশের সর্বত্র বসে আছে। বাংলাদেশের সচিবালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় এখনও পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসররা বহাল আছে। তাদের ষড়যন্ত্র বহাল আছে। তারা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছে, যাতে বাংলাদেশে খুব তাড়াতাড়ি একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হয়। সুতরাং আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমাদেরকে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে যতদিন পর্যন্ত আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের রোড ম্যাপের ঘোষণা না পাই। রোড ম্যাপের পরে যাতে সুষ্ঠু সুন্দর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের মাধ্যমে যতদিন পর্যন্ত একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততদিন পর্যন্ত আপনাদেরকে গণতান্ত্রিক সংগ্রাম বজায় রাখতে হবে। আপনারা মনে করবেন না বাংলাদেশের ওপর ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়ে গেছে, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র এবং অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও পর্যন্ত চালু রেখেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত শোভাযাত্রা পূর্ব সিলেট রেজিস্ট্রারী মাঠে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিবাদী, অগণতান্ত্রিক, একনায়ক তান্ত্রিক, এক এক দলীয় রাষ্ট্রের যারা স্বপ্ন দেখেছেন এবং একটি নরক রাজ্য বানিয়ে যারা নিজেরা ক্ষমতায় দেখতে চেয়েছেন, সেরকম কোনো শক্তিকে আমি অন্তত রাজনৈতিক শক্তি বলতে চাই না৷ আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল নয়। আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল, আওয়ামী লীগ একটি গণতন্ত্র হত্যাকারী দল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করার ইতিহাস, আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে বাংলাদেশে বাকশাল এবং একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তন করার ইতিহাস। যার ধারক ও বাহক হচ্ছেন শেখ মুজিবুর রহমান এবং যারা প্রতিনিধিত্ব করেছেন-আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা। সুতরাং যারা এখন পালিয়ে বেঁচেছেন, তাদেরকে গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের মানুষ বিচার করবে, এই দেশের আইন আদালতে তাদের বিচার হবে। তাদের যথোপযুক্ত বিচারের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে আরও সংগ্রামে লিপ্ত হতে হবে।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুুল হক চৌধুরী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্র ঋণ ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, এডভোকেট হাদীয় চৌধুরী মুন্নি, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও ড্যাব সিলেট জেলার সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম, সিলেট জেলা বারের পিপি এডভোকেট আশিক উদ্দিন।
সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নগরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে, বিপ্লব ও সংহতি দিবসের র্যালীতে যোগদান করতে দুপুর থেকে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রেজিস্ট্রারী মাঠে জড়ো হতে থাকেন।