বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৬ অপরাহ্ন

হাসিনার মতোই পালিয়েছেন আসাদ, অদৃশ্য ছিল বিমানের সংকেত
জাগো বাংলা / ২৯ টাইম ভিউ
আপডেট সময় : রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

সিরিয়ার বিদ্রোহীদের দখলের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। বিদ্রোহীদের দামেস্ক নিয়ন্ত্রণের ঘোষণার পরপরই সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রেসিডেন্টের বাসভবন এবং দামেস্ক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইটের তথ্যমতে, দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের আগে আসাদের ফ্লাইটের সংকেত বন্ধ ছিল। বিমানটি ইলিউশিন-৭৬ মডেলের, ফ্লাইট নম্বর ছিল সিরিয়ান এয়ার ৯২১৮। শেষ ফ্লাইটটি উড্ডয়ন করার পরপরই বিমানবন্দর ছেড়ে যায় সরকারি বাহিনী। ধারণা করা হচ্ছে, এই ফ্লাইটে আসাদ নিজেই ছিলেন। বিমানটি পূর্বদিকে উড়ে গিয়ে উত্তরের দিকে ঘুরে হোমস শহর প্রদক্ষিণ করার পর এর সংকেত অদৃশ্য হয়ে যায়।

এর আগে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই কৌশলে ভারতে পালিয়েছিলেন। গণবিক্ষোভের মুখে তিনি একটি সামরিক বিমানে দেশ ছাড়েন। হাসিনার ফ্লাইটপথ গোপন রাখতে উড়োজাহাজের ট্রান্সপন্ডার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ট্রান্সপন্ডারটি চালু করা হয় কেবল ভারতীয় আকাশসীমার কাছে পৌঁছানোর পর।

বিদ্রোহীদের চাপের মুখে সিরিয়ার জেনারেলরাও আসাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে হোমস থেকে সেনা প্রত্যাহার করেন। আরব দেশ ও পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে আলোচনা করে তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।

রোববার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো তাদের বিজয়ের ঘোষণা দিয়ে জানায়, “১৩ বছরের নিপীড়ন ও অত্যাচারের অবসান ঘটিয়ে সিরিয়ায় নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।” বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্ক থেকে শুরু করে হোমসসহ বিভিন্ন শহরের দখল নেয়।

বিক্ষোভকারীরা আসাদের প্রয়াত পিতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল-আসাদের মূর্তিও ভেঙে ফেলেছে। দামেস্কের জারমানা এলাকায় একটি বড় মোড়ে হাফিজ আল-আসাদের মূর্তি টেনে নামানো হয়। হোমস শহরেও একইভাবে তার মূর্তি ধ্বংস করা হয়েছে।

সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয় ২০১১ সালে আরব বসন্তের প্রভাবে। প্রায় ১৩ বছরের যুদ্ধে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত এবং লক্ষাধিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক আক্রমণে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারায় আসাদের সরকার।

আসাদ ২০০০ সালে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে ক্ষমতায় আসেন, তার পিতা হাফিজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর। প্রায় দুই দশক ধরে তিনি স্বৈরাচারী কায়দায় সিরিয়ায় শাসন চালিয়ে আসছিলেন। তবে ক্রমাগত চাপের মুখে অবশেষে তার শাসনের পতন ঘটল।

বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের এ বিজয় দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তবে, আসাদ কোথায় আশ্রয় নিয়েছেন তা এখনও নিশ্চিত নয়।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
জনপ্রিয়
সর্বশেষ