নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে নারীদের বাজারে যাওয়া নিষেধ সংক্রান্ত একটি ভুল তথ্য ভারতীয় গণমাধ্যমে নিউজ হিসেবে প্রচারিত হয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্ট চেকিং নেটওয়ার্কের স্বীকৃত তথ্য যাচাই সংস্থা রিউমর স্ক্যানারের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদরাসার ৮৯তম বার্ষিক মাহফিলের একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং লেখিকা তসলিমা নাসরিন দাবি করেন, বাংলাদেশে নারীদের বাজারে যাওয়ার ওপর ফতোয়া জারি করা হয়েছে। তাদের এ দাবি ভারতীয় গণমাধ্যম আজতক বাংলা, রিপাবলিক বাংলা, টিভি৯ বাংলা, জি২৪ ঘণ্টা, ক্যালকাটা নিউজ, আর প্লাস ও নিউজ এক্স-এস-এ সংবাদ আকারে প্রচারিত হয়।
রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিডিওটিতে ফতোয়া জারির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ভিডিওটি গওহরডাঙ্গা মাদরাসার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ২৭ নভেম্বর প্রচারিত হয়। সেখানে মাহফিলে অস্থায়ী দোকানদারদের উদ্দেশে মাইকিং করে বলা হয়:
“দোকানদার ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে, আগামীকাল থেকে এই মার্কেট এলাকায় কোনো মহিলা প্রবেশ করবে না। যদি কোনো মহিলা আসে আমরা তাদেরকে সুন্দর করে বুঝিয়ে ফিরিয়ে দিব, তাদের কাছে আমরা কোনো কিছু কেনা-বেচা করবো না।”
রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, ভিডিওটি বিশেষ একটি ধর্মীয় মাহফিলের জন্য অস্থায়ী দোকানপাটে নারীদের না আসার আহ্বান জানানো হয়। এটি কোনো বাজার বা সার্বিকভাবে নারীদের যাতায়াত নিষেধাজ্ঞা নয়।
গওহরডাঙ্গা মাদরাসা এই গুজবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেয়। তারা স্পষ্ট করে জানায়, মাহফিলের পুরুষ ও নারীদের পৃথক যাতায়াত এবং বসার রীতি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত। মাহফিলের উদ্দেশ্যে অস্থায়ী দোকানপাটে নারীদের কেনাকাটা না করার যে আহ্বান জানানো হয়েছে, তা স্থানীয় রীতিরই অংশ।
গওহরডাঙ্গা মাদরাসার এই বিশেষ ঘোষণাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়। তবে ফ্যাক্ট-চেকিং অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এটি ভুল তথ্য এবং এর ভিত্তি ধর্মীয় মাহফিলের বিশেষ রীতিনীতির ওপর।
এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারে সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রকৃত ঘটনা যাচাই করে প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।