নিজস্ব প্রতিবেদক:
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছিল। এই সংশোধনী দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করেছে বলেও উল্লেখ করেন আদালত।
গত ৫ ডিসেম্বর এই বিষয়ে জারি করা রুলের রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। দীর্ঘ ২৩ কার্যদিবস শুনানি শেষে হাইকোর্ট এই রায় দেন।
২০১১ সালের ৩০ জুন বহুল আলোচিত পঞ্চদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এই সংশোধনীর মূল বিষয়গুলো হলো:
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ: নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।
নারী সংরক্ষিত আসন বৃদ্ধি: জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়।
রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধে শাস্তির বিধান: অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান সংযোজন করা হয়।
নির্বাচনকালীন সময় পরিবর্তন: সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের আগেই নির্বাচন আয়োজনের বিধান সংযোজন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি: সংবিধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের এই রায় রাজনৈতিক এবং সাংবিধানিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনরত দলগুলোর মধ্যে নতুন করে আলোচনা শুরু হতে পারে।