ঢাকা অফিস:
সরকারি তিতুমীর কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের ৩ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের মাঝেই উত্তাপ্ত হয়ে উঠেছে তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাস। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিলো ক্যাম্পাস। বেলা ১২ টায় তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠনের দাবিতে ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে মিছিল শুরু করে টিবি গেইট হয়ে মহাখালী রেলগেট ঘুরে আমতলী মোড়ে এসে সড়কে বসে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এর ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং মহাখালী-গুলশান সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, গত রোববার ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী’ কর্মসূচী পালনের কথা ছিলো শিক্ষার্থীদের। কিন্তু কলেজ প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রোববার কলেজের সকল বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে শিক্ষকদের মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। যার ফলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ব ঘোষিত ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী’ কর্মসূচি স্থগিত করে শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত নেয়। হঠাৎ গভীর রাতে এক বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে গত ৩ নভেম্বরের মতবিনিময় সভাটি স্থগিত করে কলেজ প্রশাসন। কলেজ প্রশাসনের এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে।
ফলে মঙ্গলবার আবারও আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ‘অধিভুক্ত না স্বতন্ত্র, স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র,’ ‘অধ্যক্ষ না ভিসি? ভিসি ভিসি’, ‘ঢাবির শিকল হতে মুক্তি চাই, মুক্তি চাই’, ‘তিতুমীর কি চায়? বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘মহাখালী কি চায়? বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘ইয়ার না সেমিস্টার, সেমিস্টার, সেমিস্টার’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচী শেষে মিছিল নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে এসে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে বসে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এ সময় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে হুরহরি করে অধ্যক্ষের রুমে প্রবেশ করে তাকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, তিতুমীর বাদে ঢাবি অধিভুক্ত ৬টি কলেজ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি চায় কিন্তু তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় চাই। আমরা রাজপথ ছেড়ে পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক। এসময় শিক্ষার্থীরা নিজ কলেজ প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন, আমরা কলেজ প্রশাসনের আলোচনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী’ কর্মসূচি স্থগিত করেছিলাম। তার প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ আলোচনার দাবিকে প্রত্যাখ্যান করলেন নিশি রাতের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে। অধ্যক্ষ একেক সময় একেক কথা বলেন। আমরা জানি এই আন্দোলনে শিক্ষকরা আমাদের সাথে নেই কারণ বিশ্ববিদ্যালয় হলে তারা এখানে অধ্যাপনা করতে পারবেন না।
এর আগে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা। যারা বিভিন্ন কূটকৌশলে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় দাবি নস্যাৎ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে বুধবার ‘ব্লাকফেস র্যালি’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।