নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশজুড়ে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। উত্তরাঞ্চল থেকে শুরু হওয়া শৈত্যপ্রবাহের হিমেল বাতাসে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে সারাদেশে। আজ (১৪ ডিসেম্বর) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তেঁতুলিয়ায়, যেখানে তাপমাত্রা নেমে গেছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা শীতের অনুভূতিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
বর্তমানে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি এবং চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
শৈত্যপ্রবাহের এই প্রভাব কতদিন থাকতে পারে জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, এই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আরো দুই থেকে তিন দিন থাকতে পারে। এরপর তাপমাত্রার পারদ কিছুটা বাড়বে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা তাপমাত্রা সামান্য বাড়িয়ে দেবে।
ঘণ্টায় ১৪ থেকে ২২ কিলোমিটার গতিতে বইছে শীতল বাতাস। আবহাওয়ার ফোরকাস্টিং কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা বলেন,
“স্বাভাবিক সময়ে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার থাকে। কিন্তু শৈত্যপ্রবাহের সময় বাতাসের গতি বেড়ে যায়, যা শীতের তীব্রতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।”
ন্যাশনাল ওশেনোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. মোহন কুমার দাশ জানান, “বাতাসের কারণে শীতের অনুভূতি অনেক বেশি হচ্ছে। ঢাকায়ও বাতাসের তীব্রতা বাড়ার কারণে কানটুপি ও মাফলার ছাড়া বের হওয়া যাচ্ছে না।”
আবহাওয়াবিদরা জানান, ২০ ডিসেম্বরের পর থেকে তাপমাত্রা আবার কমতে শুরু করবে। তখন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ায় শীতের অনুভূতি আরও বাড়বে। “তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসায় শীতের তীব্রতা অনেক বেশি অনুভূত হবে,” বলেন আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা।
চলতি মাসে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা কম। তবে জানুয়ারিতে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতকাল চললেও জানুয়ারিতে শীতের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি থাকে।
বাতাসের গতিবেগ ও তাপমাত্রার ওঠানামার সঙ্গে দেশের মানুষ শীত মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে আবহাওয়াবিদদের পরামর্শ, এ সময়ে প্রয়োজনীয় গরম পোশাক ব্যবহার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা।