বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১০ অপরাহ্ন

বাগেরহাটে প্রথমবারের মতো বিদেশি লিলিয়াম ফুলের সফল চাষ
জাগো বাংলা / ১৮ টাইম ভিউ
আপডেট সময় : বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার:

বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গারফা গ্রামে নেদারল্যান্ডের সুদর্শন ফুল লিলিয়ামের সফল চাষ করেছেন তরুণ উদ্যোক্তা প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ। প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে এই বিদেশি ফুলের চাষ করে তিনি পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। তার এক শতাংশ জমিতে ফুটে থাকা লিলিয়াম ফুল নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

ফয়সাল আহমেদ জানান, লিলিয়াম ফুল চাষের আগ্রহ থেকে তিনি লালতীর সীড লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নেদারল্যান্ড থেকে ২০০টি বাল্ব (কন্দ) সংগ্রহ করে গত ৩০ অক্টোবর এক শতাংশ জমিতে সেগুলো রোপণ করেন। সাধারণত দুই মাসে ফুল আসার কথা থাকলেও, মাত্র ৩৪ দিনের মধ্যেই ফুল ফুটেছে। এই ফুল দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর, নববর্ষ এবং ২১ ফেব্রুয়ারিতে ভালো আয়ের প্রত্যাশা করছেন তিনি।

ফয়সাল আরও বলেন, “লিলিয়াম একটি দামি ফুল। এর চাহিদা ব্যাপক। প্রতিদিনই বাগান দেখতে আসছেন বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ। ফুলের সাথে ছবি তুলছেন অনেকে। এই সাফল্য দেখে স্থানীয় অনেক কৃষক লিলিয়াম চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।”

ফুল দেখতে আসা লাভনী নামের এক তরুণী বলেন, “ইউটিউবে এই ফুল দেখেছি, কিন্তু সরাসরি দেখার অভিজ্ঞতা দারুণ। আমরা চাই এই ফুলের চাষ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক।”

লালতীর সীড লিমিটেডের পরিচালক তাজওয়ার আউয়াল জানান, “নেদারল্যান্ড থেকে কন্দ এনে পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। কৃষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তি সরবরাহ করা হচ্ছে। লিলিয়ামের উৎপাদন বাড়লে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।”

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর মজুমদার বলেন, “লিলিয়াম ফুলের সৌন্দর্য এবং ঔষধি গুণাবলির কারণে দেশে এর চাহিদা প্রচুর। বর্তমানে একটি আমদানি করা লিলিয়াম ফুলের দাম দুই থেকে তিনশ টাকা। আমাদের লক্ষ্য, স্থানীয়ভাবে চাষাবাদ বাড়িয়ে এই চাহিদা মেটানো এবং কৃষকদের লাভবান করা।”

লিলিয়াম মূলত ইউরোপ, নেদারল্যান্ড ও উত্তর আমেরিকার শীত প্রধান অঞ্চলে চাষ হয়। সাদা, হলুদ, গোলাপি, লাল এবং বেগুনি বর্ণের এই ফুল দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ছয়টি প্রসারিত পাপড়ি নিয়ে এই ফুল দেখতে শিল্পীর আঁকা চিত্রের মতো।

বাগেরহাটে লিলিয়াম চাষের এই সাফল্য দেশের কৃষি ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। ফুল চাষের এই উদ্যোগ স্থানীয় কৃষকদের চাষাবাদে আগ্রহী করবে এবং ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
জনপ্রিয়
সর্বশেষ